আমি বেশির ভাগ সময় সুন্নাত ও বেতের সালাত আদায় করি না। শুধু ফরয নামাজ আদায় করি এতে কি আমার গুনাহ হবে।
ক্যাটাগরি
প্রশ্নোত্তর 5415
অর্থনৈতিক
প্রকাশকাল: 26 নভে. 2020
আমি বেশির ভাগ সময় সুন্নাত ও বেতের সালাত আদায় করি না। শুধু ফরয নামাজ আদায় করি এতে কি আমার গুনাহ হবে।
না, এমনটা করা যাবে না। রাসূলুল্লাহ সা. নিয়মতি ফরজের সাথে সুন্নাত-বিতর আদায় করেছেন। সুতরাং রাসূলুল্লাহ সা. এর প্রকৃত অনুসারী হতে হলে নিয়মিত সুন্নাত আদায় করতে হবে। দুয়েক সময় সুন্নাত না পড়লে, সেটা ভিন্ন কথা কিন্তু নিয়মিত সুন্নাত বাদ দেয়া অনুচিত কাজ। সুন্নাত হলো ফরজের পরিপূরক। ৫ ওয়াক্ত নামাযের আগে মোট ১২ রাকআত সুন্নাত আদায় করলে জান্নাতে আল্লাহ বাড়ি তৈরী করে দিবেন বলে সহীহ হাদীসে উল্লেখ আছে। عن أم حبيبة رضي الله عنها قالت : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : مَنْ صَلَّى فِي يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ ، ثِنْتَيْ عَشْرَةَ رَكْعَةً ، بُنِيَ لَهُ بَيْتٌ فِي الْجَنَّةِ ، أَرْبَعًا قَبْلَ الظُّهْرِ وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَهَا ، وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْمَغْرِبِ ، وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْعِشَاءِ ، وَرَكْعَتَيْنِ قَبْلَ صَلَاةِ الْفَجْرِ উম্মে হাবীবা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি দিনে রাতে ১২ রাকআত সালাত আদায় করবে, তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মান করা হবে। যোহরের পূর্বে ৪ রাকআত, পরে য রাকআত, মাগরিবের পর দুই রাকআত, এশার পর দুই রাকআত, এবং ফজরের পর দুই রাকআত। সুনানু তিরমিযি, হাদীস নং ৪১৫। হাদীসটি সহীহ। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭২৮। সহীহ মুসলিমে যে ব্যক্তি দিনে রাতে ১২ রাকআত সালাত আদায় করবে, তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মান করা হবে, এতোটুকু উল্লেখ আছে। ফকীহদের একটি অংশ এই ধরণের সুন্নাত ত্যাগ করলে গুনাহ হবে বলে মনে করেন। তবে সুন্নাত ত্যাগ করলে গুনাহ হয়তো হবে না কিন্তু বিরাট সওয়াব থেকে বঞিত হবেন আর আর সহীহ হাদীসে উল্লেখ আছে যে, সুন্নাত কিয়ামতের দিন ফরজের পরিপূরক হবে।হাদসটি হলো – حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ حَدَّثَنَا يُونُسُ عَنِ الْحَسَنِ عَنْ أَنَسِ بْنِ حَكِيمٍ الضَّبِّىِّ قَالَ خَافَ مِنْ زِيَادٍ أَوِ ابْنِ زِيَادٍ فَأَتَى الْمَدِينَةَ فَلَقِىَ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ فَنَسَبَنِى فَانْتَسَبْتُ لَهُ فَقَالَ يَا فَتَى أَلاَ أُحَدِّثُكَ حَدِيثًا قَالَ قُلْتُ بَلَى رَحِمَكَ اللَّهُ. قَالَ يُونُسُ أَحْسِبُهُ ذَكَرَهُ عَنِ النَّبِىِّ -صلى الله عليه وسلم- قَالَ إِنَّ أَوَّلَ مَا يُحَاسَبُ النَّاسُ بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ أَعْمَالِهِمُ الصَّلاَةُ قَالَ يَقُولُ رَبُّنَا جَلَّ وَعَزَّ لِمَلاَئِكَتِهِ وَهُوَ أَعْلَمُ انْظُرُوا فِى صَلاَةِ عَبْدِى أَتَمَّهَا أَمْ نَقَصَهَا فَإِنْ كَانَتْ تَامَّةً كُتِبَتْ لَهُ تَامَّةً وَإِنْ كَانَ انْتَقَصَ مِنْهَا شَيْئًا قَالَ انْظُرُوا هَلْ لِعَبْدِى مِنْ تَطَوُّعٍ فَإِنْ كَانَ لَهُ تَطَوُّعٌ قَالَ أَتِمُّوا لِعَبْدِى فَرِيضَتَهُ مِنْ تَطَوُّعِهِ ثُمَّ تُؤْخَذُ الأَعْمَالُ عَلَى ذَاكُمْ রসূল (সাঃ) বলেন, কিয়ামতের দিন বান্দার নিকট থেকে তার আমলসমূহের মধ্যে যে আমলের হিসাব সর্বাগ্রে নেওয়া হবে, তা হল সালাত। সালাত ঠিক হলে সে পরিত্রাণ ও সফলতা লাভ করবে। নচেৎ (সালাত ঠিক না হলে) ধ্বংস ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সুতরাং (হিসাবের সময়) ফরয সালাতে কোন কমতি দেখা গেলে আল্লাহ তাবারাকা অতাআলা ফিরিশ্তাদের উদ্দেশ্যে বলবেন, দেখ, আমার বান্দার কোন নফল (সালাত) আছে কি না। অতএব তার নফল সালাত দ্বারা ফরয সালাতের ঘাটতি পূরণ করা হবে। অতঃপর আরো সকল আমলের হিসাব অনুরুপ গ্রহণ করা হবে।সুনানু আবু দাউদ, হাদীস নং ৮৬৪, সুনানু তিরমিযী, হাদীস নং ৪১৩। হাদীসটি সহীহ। সুতরাং যদি আমরা সুন্নাত আদায় না করি তাহলে যদি কিয়ামতের দিন আমাদের ফরজগুলো যথাযথ না হয় তাহলে আমরা বিপদে পড়ে যাবো। আর সুন্নাত আদায় করলে আল্লাহ ফরজগুলোর অপূর্ণতা সুন্নাত দ্বারা পূর্ণ করে দিবেন।