আস-সুন্নাহ ট্রাস্ট

প্রশ্নোত্তর

ক্যাটাগরি

প্রশ্নোত্তর 5010

হালাল হারাম

প্রকাশকাল: 18 অক্টো. 2019

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম। আমি একটা বিষয় জানতে চাচ্ছি। আল্লহ ব্যবসাকে হালাল করেছেনে এবং সুদ হারাম করেছেন। আমি একটি নতুন ব্যবসায় নামতে চাচ্ছি কিন্তু সেখানে সুদের কারবার চলে আসে কিনা এ নিয়ে চিন্তিত। ব্যবসাটা এরকমঃ কোনো একটা ই-কমার্স সাইটে বিভিন্ন পণ্য বাজার দামের চাইতে প্রায় অর্ধেক কমে পাওয়া যাচ্ছে। এক্ষেত্রে আগে টাকা দিতে হয় এবং তারা পণ্য দিতে কখনো কখনো ৩/৪/৫/৬/৭ মাসও দেরি করে। আমি হোন্ডা কিনতে চাই। অর্ধেক দামে সেগুলো কিনে কিছুটা বেশি দামে তা বিক্রি করবো। কিন্তু এই বাইকগুলো দিতে ৩ থেকে ৭ মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। আবার সমস্যা হলো কেউ যদি এতদিন অপেক্ষা করতে না চায় তাহলে উক্ত ব্যক্তি চাইলে ওই প্রতিষ্টান ব্যাংক চেক দিয়ে দেয়। এই চেকটা অফারের দামের চেক নয়, বাজার মূল্যের চেক। অর্থ্যাৎ কেউ যদি অফারে ১ লাখ টাকা দামে হোন্ডা কিনে, ৫/৬/৭ মাস পর সে চাইলে তাকে বাজার মূল্য অর্থাৎ প্রায় ২ লাখ টাকার চেক দিয়ে দেয়। ফলে সে বাইক পেলেও তার বিক্রি করে লাভ হয় আর বাইক না পেলেও তার আরো বেশি লাভ হয়। বেশি লাভ হয় ঠিক আছে, কিন্তু এখানে এটা কি সুদের অন্তর্ভূক্ত হবে? কারণ আমার ধারণা তারা আসলে আমাদের থেকে অগ্রীম টাকা নিয়ে এই কয়েকমাস অন্য কোথাও ইনভেস্ট করে এবং তা থেকে অর্জিত লভ্যাংশ দিয়ে আমাদের এরকম অফার দেয়। কেউ একজন ১ কোটি টাকা ইনভেস্ট করে বাইক নেয়া ছাড়াই চেক নিয়ে ৬০ লক্ষ টাকা লাভ পেয়েছে। আমার প্রশ্ন হলোঃ
১) এ পদ্ধতিতে ব্যবসা জায়েজ হবে কিনা?
২) ৫/৬/৭ মাস টেনশান নিয়ে ধৈর্য্যে ধরার পর ব্যাংক চেক নিলে, টাকার বদলে টাকা নিলে সেটা কি সুদের অন্তর্ভূক্ত হবে?

উত্তর

ওয়া আলাইকুমুস সালাম। আমি যখন এই প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি তখন তো স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, এই ই-কমার্সগুলো মানুষকে কী পরিমাণ ধোকা দিয়েছে। ইভালী, ই-অরেঞ্জসহ এই কোম্পানীগুলোর মানুষের টাকা নিয়ে সব আত্মসাত করেছে। বাজার মূল্যের চেয়ে অর্ধেক হলে একটি স্বাভাবিক প্রশ্ন চলে আসে বাকী টাকা তারা কোথায় পাবে? এই প্রশ্রের উত্তরও এখন নিশ্চয় সবার জানা হয়ে গেছে যে, তারা আসলে এভাবে মানুষের থেকে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে অফিস, ফোন সব বন্ধ করে মানুষদেরকে সর্বস্বান্ত করেছে। দুয়েকজনকে পণ্য দিয়ে লোভ দেখিয়ে হাজার হাজার মানুষের শত শত কোটি টাকা তার নিজেদের পকেটে পুরেছে। এখন কিছু মামলা হবে, তবে এতে গ্রাহকরা তাদের মূল টাকাও পাবে না, ডাবল মূল্যেল পণ্য তো দূরের কথা। এই ধরণের ধোকার সুযোগ যে ব্যবসাতে থাকে ইসলাম তার অনুমতি দেই না। এছাড়া মানুষের টাকা কোম্পানী কয়েক মাসের জন্য ধার নিয়ে এর জন্য অতিরিক্ত সুবিধা দেয়ার চুক্তি করা হচ্ছে, যা সুস্পষ্ট নাজায়েয। তাদের কাজকর্মের প্রতারণার কথা যদি আপনি বাদও দেন তারপরও এখানে এই সুদ পাওয়া যাচ্ছে। ২। টাকার বদলে টাকা নিলে যত দিন, মাস, বছর পরেই নিন না কেন, তা সুদ হিসেবে গণ্য। যদি আপনি কোন কোম্পানীর সাথে শেয়ারে ব্যবসার চুক্তি করেন, যেখানে আপনি টাকা বিনিয়োগ করবেন, মালিকদের একজন আপনি হবেন এবং লাভের পরিমাণ শতাংশে নির্ধারত হবে, যেমন, শতকারা লাভের ৩০ পার্সেন্ট আপনি পাবেন, তাহলে বছর শেষে চুক্তি অনুযায়ী টাকা আপনি নিতে পারবেন। যেহেতু আপনি এখানে ক্রয় করার চুক্তি করেছেন, তাই পণ্য না পেলে আপনি মূল টাকাটা ফেরত নিতে পারেন, বেশী নেওয়া সম্পূর্ণ সুদ হিসেবে গণ্য। বিস্তারিত জানতে https://adarshanari.com/economics/10235/