ওয়া আলাইকুমুস সালাম।সালাতুত তাসবীহ বিষেয়ে শাায়খ ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রহি. রাহে বেলায়াত বইয়ে লিখেছেন:
যিকিরেরমূল চারটি বাক্য: তাসবীহ সুবহানাল্লাহ, তাহমীদ আল-হামদু লিল্লাহ, তাহলীল লা- ইলাহা ইল্লল্লাহ এবং তাকবীর আল্লাহু আকবার। সালাতুত তাসবীহ-এর মধ্যে সালাতরত অবস্থায় এ যিকিরগুলো পাঠ করা হয়। চার রাকআত সালাতে প্রতি রাকআতে ৭৫ বার করে চার রাকআতে মোট ৩০০ বার উক্ত যিকিরগুলো আদায় করা হয়। আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাز তাঁর চাচা আব্বাস (রা)-কে বলেন: চাচাজি, আমি আপনাকে একটি বিশেষ উপহার ও বিশেষ অনুদান প্রদান করব, যা পালন করলে আল্লাহ আপনার ছোট, বড়, ইচ্ছাকৃত, অনিচ্ছাকৃত, প্রকাশ্য, গোপন সকল গোনাহ ক্ষমা করবেন। তা এই যে, আপনি চার রাকআত সালাত আদায় করবেন। প্রত্যেক রাকআতে সূরা ফাতিহা ও অন্য যে কোনো একটি সূরা পাঠ করবেন। প্রথম রাকআতে সূরা ফাতিহা ও অন্য যে কোনো সূরা পাঠের পর দাঁড়ানো অবস্থায় ১৫ বার বলবেন:
سُبْحَانَ اللهِ، وَالْحَمْدُ للهِ، وَلاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ، وَاللهُ أَكْبَر
উচ্চারণ: সুবহা-নাল্লাহ, ওয়ালহামদুলিল্লাহ, ওয়ালা- ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আল্লা-হু আকবার । সুনানু আবু দাউদ, হাদীস নং ১২৯৯, সুনানুেইবনে মাজাহ, হাদীস নং ১৩৮৭। এরপর রুকুতে গিয়ে রুকু অবস্থায় উপরের যিকিরগুলো ১০ বার, রুকু থেকে উঠে দাঁড়ানো অবস্থায় ১০ বার, সাজদা রত অবস্থায় ১০ বার, প্রথম সাজদা থেকে উঠে বসা অবস্থায় ১০ বার, দ্বিতীয় সাজদায় ১০ বার এবং দ্বিতীয় সাজদা থেকে উঠে (বসা অবস্থায়) ১০ বার। এ মোট এক রাকআতে ৭৫ বার (চার রাকআতে মোট ৩০০ বার)। সম্ভব হলে আপনি প্রতিদিন একবার, না হলে প্রতি সপ্তাহে একবার, না হলে প্রতি মাসে একবার, না হলে প্রতি বছর একবার, না হলে সারা জীবনে একবার এ সালাত আপনি আদায় করবেন। সালাতুত তাসবীহ সংক্রান্ত অধিকাংশ হাদীসই অত্যন্ত যয়ীফ সনদে বর্ণিত। একমাত্র এ হাদীসটিকে অনেক মুহাদ্দিস সহীহ হিসাবে গ্রহণ করেছেন। যদিও অনেক মুহাদ্দিস হাদীসটির ভাব ও ভাষা বিষয়েও আপত্তি করেছেন। ইমাম তিরমিযী প্রখ্যাত তাবে-তাবেয়ী আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারাক (১৮১ হি) থেকে সালাতুত তাসবীহ-এর আরেকটি নিয়ম উল্লেখ করেছেন। তাঁর মতে এ অতিরিক্ত যিকিরগুলোআদায়ের নিয়ম: নামায শুরু করে শুরুর দুআ বা সানা পাঠের পরে ১৫ বার, সূরা ফাতিহা ও অন্য কোনো সূরা শেষ করার পরে ১০ বার, রুকুতে ১০ বার, রুকু থেকে উঠে ১০ বার, প্রথম সাজদায় ১০ বার, দুই সাজাদার মাঝে ১০ বার ও দ্বিতীয় সাজদায় ১০ বার মোট ৭৫ বার প্রতি রাকআতে। অর্থাৎ, এ নিয়মে কিরাআতের পূর্বে ও পরে দাঁড়ানো অবস্থায় ২৫ বার তাসবীহ পাঠ করা হয় আর দ্বিতীয় সাজদার পরে বসা অবস্থায় কোনো তাসবীহ পড়া হয় না। পূর্বের হাদীসে বর্ণিত নিয়মে কিরাআতের পূর্বে কোনো তাসবীহ নেই। দাঁড়ানো অবস্থায় শুধু কিরাআতের পরে ১৫ বার তাসবীহ পড়তে হবে। প্রত্যেক রাকআতে দ্বিতীয় সাজদার পরে বসে ১০ বার তাসবীহ পড়তে হবে। ইবনুল মুবারক বলেন, যদি এ সালাত রাত্রে আদায় করে তবে দু রাকআত করে তা আদায় করবে। অর্থাৎ, দু রাকআত শেষে সালাম ফিরিয়ে আবার দু রাকআত আদায় করবে। আর দিনের বেলায় ইচ্ছা করলে একত্রে চার রাকআত অথবা ইচ্ছা করলে দু রাকআত করেও আদায় করতে পারে। সালাতুত তাসবীহ-এ রুকু ও সাজদায় প্রথমে রুকু ও সাজদার তাসবীহ সুবহানার রাব্বিয়্যাল আযীম ও সুবহানা রাব্বিয়্যাল আলা নূন্যতম তিন বার করে পাঠ করার পরে অতিরিক্ত তাসবীহগুলো পাঠ করতে হবে। দলীলসহ বিস্তারিত জানতে দেখুন, শায়খ ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রহ. রচিত রাহে বেলায়াত বইটি।