মুমিন যে কোনো ভাষায় ও বাক্যে আল্লাহর যিকর বা প্রার্থনা করলে তিনি মূল ইবাদতের সাওয়াব ও ফল পেতে পারেন। তবে মুমিনের শ্রেষ্ঠ বাসনা সকল বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সা. এর অনুকরণ করা। যিকর ও দুআর ক্ষেত্রে তাঁর শেখানো বা আচরিত বাক্যগুলো হুবহু ব্যবহার মুমিনের সর্বোচ্চ কাম্য ও দায়িত্ব। এতে সাওয়াব ও কবুলিয়্যাতের আশা অনেক বেশি। সাহাবী-তাবিয়ীগণ মাসনূন বাক্যাবলি ব্যবহারের পাশাপাশি কখনো কখনো অন্যান্য বাক্য ব্যবহার করতেন। তবে সুন্নাতের ব্যতিক্রম বাক্য দ্বারা যিকর, দুআ বা দরুদ-সালাম পালন রীতিতে পরিণত করলে মাসনূন বাক্যাবলির প্রতি অনীহা এবং এ বিষয়ক সুন্নাতের প্রতি অবজ্ঞার মনোভাব জন্ম নেয়, মাসনূন বাক্যাবলি বা সুন্নাতের মৃত্যু ঘটে এবং এভাবে খেলাফে সুন্নাত থেকে বিদআতের জন্ম হয়। এ মূলনীতির ভিত্তিতে মাসনূন বাক্যগুলোর অর্থবোধক যে কোনো বাক্যে রাসূলুল্লাহ সা.কে সালাত ও সালাম জানানো যেতে পারে। তবে মাসনূন বাক্যাবলির ব্যবহার সর্বোত্তম। দরুদে ইবরহীম ছাড়াও আরো কিছু দরুদ বা সালাত হাদীসে উল্লেখ আছে। আসমা বিনতে আবু বাকর রা. সর্বদা বলতেন,
صَلَّى اللَّهُ عَلَى رَسُولِهِ وَسَلَّمَ
সাল্লাল্লাহু আলা- রসূলিহি ওয়া সাল্লাম
আল্লাহ তাঁর রাসূলের উপর সালাত ও সালাম প্রেরণ করুন। সহীহ মুসলিম,হাদীস নং ৩০৬৩। আরো একটি হলো মাসনূন সালাত হলো, اللهم صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَأَنْزِلْهُ الْمَقْعَدَ الْمُقَرَّبَ عِنْدَكَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা, স্বাল্লি আলা- মুহাম্মাদিন, ওয়া আনযিলহুল মাক্বআদাল মুর্ক্বারাবা ইনদাকা ইয়াওমাল ক্বিয়ামাহ। অর্থ: হে আল্লাহ মুহাম্মাদের উপর সালাত (দরুদ) প্রেরণ করুন এবং তাঁকে কিয়ামতের দিন আপনার নৈকট্যপ্রাপ্ত অবস্থানে অবতীর্ণ করুন। রুআইফি বিন সাবিত আনসারী (রা) বলেন: রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন:
مَنْ قَالَ … وَجَبَتْ لَهُ شَفَاعَتِي
যে ব্যক্তি উপরের কথাগুলো (সালাতটি) বলবে, তার জন্য আমার শাফায়াত পাওনা হবে। হাদীসটির সনদে একজন দুর্বল রাবী রয়েছেন, তবে আল্লামা হায়সামী ও মুনযিরী হাদীসটিকে হাসান বা গ্রহণযোগ্য বলেছেন। মুসনাদে আহমাদ ২/৩৫২, তাবারানী, আল-মুজামুল কাবীর ৫/২৫-২৬; আল-মুজামুল আউসাত ৩/৪৫৬, নং ৩২৯৭, হাইসামী, মাজমাউয যাওয়ায়িদ ১০/১৬৩, মুনযিরী, আত-তারগীব ২/৫০২-৫০৩। দরুদে ইবরাহীমীর তিনটি আরবী পাঠসহ আরো কিছু মাসনুন দরুদ এবং দরুদ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে দেখুন, আস-সুন্নাহ পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশিত রাহে বেলায়াত ১৭৩-১৯৫ পৃষ্ঠা।