ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। প্রশ্নটি করার জন্য আপনাকে শুকরান । নিম্নে আপনার প্রশ্নে উল্লেখিত বিষয়ে স্বল্পপরিসরে আলোচনা করা হল । আশা করি তাতে আপনি আপনার প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাবেন। দুনিয়ার জীবনে যে ব্যাক্তিই গুনাহ বা অপরাধ করবে, কবরে সে ব্যক্তিই শাস্তির যগ্য (আল্লাহর কাছে তাওবা করে মাফ পেয়ে গেলে ভিন্ন কখা)। সে যেদিনেই মৃতবরণ করুক, এক্ষেত্রে দিন-তারিখ বা সময়ের কোন শ্রেষ্ঠত্য নেই। কারন সওয়াব বা ফযীলত বান্দার আমলের ওপর নির্ভর করে। একটি হাদীসে জুমআর দিনে মৃতবরনের ফযীলতের বিষয়ে বলা হলেও তা অত্যন্ত দুর্বল একাধিক সনদ একত্রিত করার পরও হাদীসটির দুর্বলতা দূর হয়নি। -হাদীসের আরবী উচ্চারণ নিম্নরুপ:
القبر ما من مسلم يموت يوم الجمعة أو ليلة الجمعة إلا وقاه الله فتنة
অর্থঃ যে ব্যাক্তিই জুমআর দিনে বা রাতে মৃত বরণ করবে আল্লাহ তাকে কবরের ফেতনা থেকে রক্ষা করবেন। শায়খ আলবানী রহঃ হাদীসটি তার আহকামুল জানাইয গ্রন্থে এনে বলেছেন: সনদের সমষ্টির ভিত্তিতে হাদীসটি সহীহ বা হাসান। খন্ড,১ পৃষ্ঠ,৩৫। কিন্তু তুহফাতুল আহওযী গ্রন্থের লেখক তার কিতাবে হাদীসটিকে ইনকিতা এর ভিত্তিতে দুর্বল বলেছেন। খন্ড,৩ পৃষ্ঠ,১৩৮। আর শায়খ শুয়াইব আরনাউত বলেন: হাদীসটির সনদ দুর্বল্ । আলবানী রহঃআহকামুল জানাইজ গ্রন্থে হাদীসটিকে হাসান বা সহীহ বলার ক্ষেত্রে ভুল করেছেন। মুসনাদে আহমাদ,তাহকীক,শুয়াইব আরনাউত,খন্ড ২, পৃষ্ঠা ১৬৯। তবে যদি কেউ রোজায় থাকা অবস্থায় মারা যায় তাহলে তার ব্যাপারে কল্যাণের আশা করা যেতে পারে। একটি হাদীসে এসেছে রাসূল সাঃ বলেন:
ومن صام يوما ابتغاء وجه الله ختم له بها دخل الجنة
অর্থঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে একদিন রোজা রাখল, এ অবস্থাতে তার মৃত্যু ঘটল সে ব্যাক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে। হাদীসটি সহীহ লিগয়রিহী এবং সনদের সকল রাবী ছিকাহ, তবে মুনকাতি। মুসনাদে আহমাদ, তাহকীক,শুয়াইব আরনাউত,খন্ড,৫ পৃষ্ঠা ৩৯১। শায়খ আলবানী বলেন: হাদীসের সনদটি সহীহ। আহকামুল জানাইজ, খন্ড,১ পৃষ্ঠা ৪৩। হায়সামী রহঃ বলেন:উসমান ইবনে মুসলিম ছাড়া সনদের সকল রাবী সহীহের রাবী। তবে তিনি ছিকাহ। মাজমাউজ জাওয়ায়েদ, খন্ড, ৭ পৃষ্ঠ,১৪০। উপরের আলোচনা দ্বারা একথা স্পষ্টভাবেই বুঝা যায় যে, নিসক রমজানের দিবসে মারা যাওয়ার ব্যাপারে কোন সহীহ বা দুর্বল হাদীস বর্ণীত হয়নি। যা আছে তা শুক্রুবার কিংবা রোজা থাকা অবস্থায় মারা যাওয়ার ক্ষেত্রে। আল্লা্হ আমাদেরকে উত্তম মৃত্যু দান করুন। আমীন।