আস-সুন্নাহ ট্রাস্ট

প্রশ্নোত্তর

ক্যাটাগরি

প্রশ্নোত্তর 1819

বিবাহ-তালাক

প্রকাশকাল: 22 জানু. 2011

প্রশ্ন

আমার এক মুসলিম বন্ধু নাম তার শাহেদ হাসান সে এক হিন্দু মেয়ে জবা বিশ্বাসকে ভালবাসে। উভয়ে নিজ নিজ ধর্ম অনুযায়ী গত ৪ঠা আগষ্ট ২০১৭ রোজ শুক্রবার রাত ১১-১০ মিনিটে ফেসবুকের মাধ্যমে বিবাহ করেছে। বন্ধু শাহেদ হাসান পাঁচ ওয়াক্ত নামায রোযা এবং শরীয়াত অনুযায়ী যথাসাধ্য দ্বীনের কাজগুলি সঠিকভাবে করে যাবার চেষ্টা করে। অন্যদিকে জবা বিশ্বাস তার ধর্ম মানে কিন্তু কোন আচার-অনুষ্ঠান করেনা। তবে সে এই বিয়ের পুর্বে উপোষ থেকে শিবমন্দিরে উপস্থিত হয়ে পুরোহিতের মাধ্যমে তার মানত পুজা করেই এ বিয়েতে তাদের ধর্ম অনুযায়ী বিয়ে করেছে। শাহেদ হাসান তার ধর্মানুযায়ী তাকে তিনবার কবুল বলতে বললে জেবা বিশ্বাস যথারীতি তাই করেছে। অন্তর থেকে তারা এখন উভয় উভয়কে স্বামী-স্ত্রী হিসাবে নিজেদের গন্য করে। প্রসঙ্গত: তারা দুজনে দুই জেলায় ব্যবধান প্রায় ২৫০ কিলোমিটার। শাহেদ হাসান পুর্বে বিবাহ করেছিলো কিন্তু তার স্ত্রী প্রায় সাত বছর আগে ইন্তেকাল করেছেন। তারপর শাহেদ হাসান আর বিবাহ করেননি। শাহেদ হাসান যে পুর্বে বিবাহ করেছিলেন তা জবা বিশ্বাসকে জানিয়েছেন এবং জবা বিশ্বাস সানন্দে তা মেনেও নিয়েছেন। আমার জানামতে তারা এখন অব্দি শারীরিকভাবে মিলিত হয়নি। বিবাহ পুর্ব দেখা সাক্ষাৎ হয়েছে তবে কোন শারীরিক মিলন ঘটেনি। শাহেদ হাসান তাকে এ পথ থেকে ফেরানোর যথেষ্ঠ চেষ্টা নিয়েছে কিন্তু সফল না হওয়াতে বিবাহ করেছে। জবা বিশ্বাস অনার্স তৃতীয় বর্ষে ঢাকা ইডেন কলেজে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে। শাহেদ হাসান ব্যবসা করেন। শাহেদ হাসানে আগের পক্ষের দুটি সন্তান আছে। তারা বিবাহ শাদী করে নিজ পরিবারে বসবাস করে। শাহেদ হাসানকে তারা আর্থিক সহযোগিতা করে থাকে। এ বিয়েতে সরেজমিনে কোন সাক্ষী সাবুদ না থাকলেও ফেসবুকের তাদের কাছের বন্ধুরা প্রায় সবাই বিবাহের কথা এবং তারা স্বামী-স্ত্রী এটা জানেন। শাহেদ হাসান এখন জবা বিশ্বাসের সম্পুর্ন ভরন-পোষন দিয়ে আসছে। জবা বিশ্বাস ফাইনাল পরীক্ষা না দেয়া পর্যন্ত এ বিবাহের কথা তার পরিবারের কাছে গোপন রাখতে চাইছে। শাহেদ হাসান জবা বিশ্বাসকে ধর্মান্তরিত হবার জন্য কোন চাপ সৃষ্টি করেননি। তবে তার বিশ্বাস একদিন সে ঠিকই মুসলিম হবে। কারন এর মধ্যেই জবা বিশ্বাস কিভাবে নামায আদায় করতে হয় তা জানতে চেয়েছে। এমতবস্থায় আপনাদের কাছে প্রশ্ন এ বিবাহ কতটুকু বৈধ বলে গণ্য হবে বা পরবর্তী করনীয় কি [উভয়ের জন্য]? দ্বিতীয় প্রশ্ন আমি শুনেছি কোন মুসলিম যদি কোন অমুসলিমকে বিবাহ করেন তাহলে ইসলামী শরীয়াহ অনুযায়ী যে মুসলিম অমুসলিমকে বিবাহ করার কারনে তার বংশের পুর্ব পুরুষসহ সে নিজে বিশেষ সওয়াবের অধিকারী হবেন-কথাটি ঠিক? অনুগ্রহ পুর্বক যথাসম্ভব দ্রুত উত্তর প্রত্যাশা করছি। কারন আপনাদের জবাবের উপর ওদের দুজনের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে এবং স্বামী-স্ত্রীর মিলন ঘটবে।

উত্তর

আপনার বন্ধুর উদ্দেশ্য ভাল, এটা প্রশ্ন থেকে মনে হচ্ছে। তবে কথা হলো কোন মুসলিম কোন হিন্দু মেয়েকে বিবাহ করতে পারবে না। কুরআনে আল্লাহ তায়ালা স্পষ্ট করে বলেছেন, وَلاَ تَنكِحُواْ الْمُشْرِكَاتِ حَتَّى يُؤْمِنَّ وَلأَمَةٌ مُّؤْمِنَةٌ خَيْرٌ مِّن مُّشْرِكَةٍ وَلَوْ أَعْجَبَتْكُ তোমরা মুশরিক মহিলাদের বিবাহ করো না যতক্ষন না তারা ঈমান আনে আর একজন মূমিন দাসী এবং মুশরিক থেকে উত্তম যদিও মুশরিক মহিলা তোমাদেরকে বিমোহীত করে। সূরা বাকারা, আয়াত নং ২২১। সুতরাং উক্ত বিয়ে হয় নি। এই বিষয়ে সকল আলেম ও ফকীহ একমত। তবে ঐ মেয়েটি মুসলিম হলে আপনার বন্ধু তার সাথে শরয়ী নিয়মে বিবাহ করতে পারে। ফেসবুকে বিবাহ এটা বিয়ের মত একটি পবিত্র বিষয়ের সাথে মানায় না। সামাজিকভাবে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে বিবাহ হওয়া উচিত। দ্বিতীয়ত অমুসলিমকে বিবাহ দ্বারা উদ্দেশ্য হলো: অমুসলিম মুসলিম হওয়ার পর, অমুসলিম থাকা অবস্থায় নয়।