আস-সুন্নাহ ট্রাস্ট

প্রশ্নোত্তর

ক্যাটাগরি

প্রশ্নোত্তর 1006

নামায

প্রকাশকাল: 31 অক্টো. 2008

প্রশ্ন

Assalamu Alaikum. Amar prosno holo – * ২ অথবা ১ রাকাত বিশিষ্ট সালাতে তাওয়াররুক হবে? ** কোন ব্যক্তি সালাত পড়াকালীন সময় তার সামনে দিয়ে যাওয়া ঠিক নয় । কিন্তু ঠিক কতটুকু পরিমাণ ব্যবধান থাকলে তার সামনে দিয়ে যাওয়া যাবে?

উত্তর

ওয়া আলাইকুমুস সালাম। তাওয়াররুক কারা করবে কখন করবে তা নিয়ে আলেমদের মাঝে মতবিরোধ আছে। একদল আলেম বলেন, পুরুষরা করবে না আর মহিলারা করবে। আরেক দল বলেন, সালাত চার রাকআত হলে প্রথম বৈঠকে করবে না দ্বিতীয় বৈঠকে করবে আর দুই রাকআত বিশিষ্ট হলে করবে না।অন্য আরেক দল বলেন, শেষ বৈঠকে করবে, সালাত যে কয় রাকআত বিশিষ্ট হোক না কেন। যারা বলেন, পুরুষেরা তাওয়াররুক করবে না তাদের দলীল, وَكَانَ يَقُولُ فِى كُلِّ رَكْعَتَيْنِ التَّحِيَّةَ وَكَانَ يَفْرِشُ رِجْلَهُ الْيُسْرَى وَيَنْصِبُ رِجْلَهُ الْيُمْنَى রাসূলুল্লাহ সা. প্রতি দুই রাকআতে তাশাহুদু পড়তেন এবং তিনি তার বাম পা কে বিছাতেন এবং ডান পা কে উঁচু করে রাখতেন। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৩৮। অন্য হাদীসে আছে, عن وائل بن حجر قال : قدمت المدينة قلت لأنظرن إلى صلاة رسول الله صلى الله عليه سولم فلما جلس يعني للتشهد افترش رجله اليسرى ووضع يده اليسرى يعني على فخذه اليسرى ونصب رجله اليمنى অর্থ : ওয়ায়েল ইবনে হুজর বলেন, আমি মদীনায় গেলাম এবং রাসূলুল্লাহ সা. এর সালাত লক্ষ করতে লাগলাম, যখন তিনি তাশাহুদের জন্য বসতেন তখন বাম পা কে বিছাতেন এবং বাম হাতকে বাম রানের উপর রাখতেন এবং ডান পা কে উঁচু করে রাখতেন। সুনানু তিরমিযী, হাদীস নং ২৯২। হাদীসটি সহীহ। এই দুই হাদীসের আলোকে তারা বলেন সালাতের ভিতর পুরুষেরা তাওয়াররু্ক করবে না। হানাফী মাজহাবের অভিমত এটাই । আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষের আমল এটাই। যারা বলেন, শেষ বৈঠকে করবে, সালাত যে কয় রকআত বিশিষ্ট হোক না কেন তাদের দলীল,রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, وَإِذَا جَلَسَ فِي الرَّكْعَةِ الآخِرَةِ قَدَّمَ رِجْلَهُ الْيُسْرَى وَنَصَبَ الأُخْرَى وَقَعَدَ عَلَى مَقْعَدَتِهِ যখন শেষ বৈঠকে বসবে তখন বাম পা কে অগ্রবর্তী করবে আর অ্ন্য পা কে (ডান পা কে) উচুঁ করবে। সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৮২৮। শাফেয়ী মাজহাবের আলেমগণের অভিমত এটাই। উপরের হাদীসগুলোকে সমন্বয় করে আরেক দল বলেন, সালাত দুই রাকআত বিশিষ্ট হলে তাওয়াররুক করবে না, আর চার রাকআত বিশিষ্ট হলে শেষ বৈঠকে তাওয়াররুক করবে। হাম্বলী মাজাহাবের মত। শায়খ বিন বায, উসমায়মিন রহ.ও এই মত পোষন করেন। যারা তাওয়াররুক করতে চান তাদের জন্য এই মতটিই সবচেয়ে উপযোগী বলে মনে হয়। বিস্তারতি জানতে দেখুন, আল-ইসলাম সুয়াল জওয়াব, ফতাওয়া নং ১০৩৮৮৬ ও মারকাযুল ফাতাওয়া, ফাতাওয়া নং ৩৫৯৪৩। নামাযরত ব্যক্তির সামনে দিয়ে যাওয়া জায়েজ নেই। রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, لَوْ يَعْلَمُ الْمَارُّ بَيْنَ يَدَيِ الْمُصَلِّي مَاذَا عَلَيْهِ لَكَانَ أَنْ يَقِفَ أَرْبَعِينَ خَيْرًا لَهُ مِنْ أَنْ يَمُرَّ بَيْنَ يَدَيْهِ قَالَ أَبُو النَّضْرِ لاَ أَدْرِي أَقَالَ أَرْبَعِينَ يَوْمًا ، أَوْ شَهْرًا، أَوْ سَنَةً নামাযরত ব্যক্তির সামানে দিয়ে যাতায়াতকারী ব্যক্তি যদি জানতো এতে কি পরিমাণ গুনাহ হয় তাহলে সে সামনে দিয়ে যাওয়ার চেয়ে চল্লিশ ( দিন,মাস কিংবা বছর উদ্দেশ্য, বর্ণনা স্পষ্ট নয়) দাঁড়িয়ে থাকাকে উত্তম মনে করত। সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫১০। মুসনাদে বায-যারে (হাদীস নং ৩৭৮২)আছে চল্লিশ বছর। তবে সামনে কতুটুকু পরিমান জায়গার মধ্যে যেতে পারবে না সে বিষয়ে মতভেদ আছে। হাফিজ ইবনে হাজার আসকালানী রহ. বলেন, وَاخْتُلِفَ فِي تَحْدِيدِ ذَلِكَ فَقِيلَ إِذَا مَرَّ بَيْنَهُ وَبَيْنَ مِقْدَارِ سُجُودِهِ ، وَقِيلَ بَيْنَهُ وَبَيْنَهُ قَدْرَ ثَلَاثَةِ أَذْرُعٍ وَقِيلَ بَيْنَهُ وَبَيْنَهُ قَدْرَ رَمْيَةٍ بِحَجَرٍ অর্থ: এর সীমা নিয়ে মতভেদ আছে। কারো মতে, সিজাদা দেয়ার স্থান পর্যন্ত, কেউ কেউ বলেন, তিন হাত, আবার কেউ কেউ বলেন, পাথর নিক্ষেপ করলে যতুটুকু যায় সেই পরিমাণ। ফাতহুল বারী, ১/৫৮৫ (শামেলা)। এজন্য সর্বদা সালাতরত ব্যক্তির সামনে দিয়ে যাওয়া পরিহার করবেন। একান্ত বাধ্য হলে অন্তত দু কাতার দূর থেকে যাবেন।