আস-সুন্নাহ ট্রাস্ট

প্রশ্নোত্তর

ক্যাটাগরি

প্রশ্নোত্তর 1307

জিহাদ

প্রকাশকাল: 28 আগস্ট 2009

প্রশ্ন

আসছালামু আলাইকুম, (আলহামদুলিল্লাহ) আপনাদের প্রশ্নপর্বে খুব উপকার পাচ্ছি। আমার আজকের প্রশ্ন জিহাদ সম্পর্কে: ১। জিহাদ কি? কখন জিহাদ করা প্রয়োজন? বর্তমান পরিস্থিতিতে কি মুসলীম উম্মাহর জিহাদ করার সময় এসেছে?, না এসে থাকলে আমাদের বর্তমান পরিস্থিতিতে(চারিদিকে মুসলীমদের নির্যাতন, আল্লহর আইনের বিরুদ্ধে আইন) করনীয় কিছু আছে? ২। https://www.youtube.com/watch?v=468poH-U6wk এই লিংকে শাইখ তামিম আল-আদনানী যেভাবে জিহাদের দিকে মুসলীম তরুনদের ডাকছে সেভাবে ডাকা কি ঠিক হচ্ছে? তিনি, আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) যাকাতের ব্যাপার নিয়ে যাদের সাথে জিহাদের ঘোষনা দিতে চেয়েছিল তার রেফারেন্স দিয়েছেন সেটা কতটুকু সত্য?
৩। ইসলামে জিহাদের সঠিক ব্যাখ্যা সম্পর্কে কোন বই আছে?, থাকলে বইটার নামটা বললে উপকৃত হবো। ৪। আমার এক পরিচিত ভাই বাংলাদেরশ পুলিশে চাকরি করে, সে আমাকে বলে (এভাবে বুঝাতে চেয়েছেন..) রাসূল সাঃ যে ভাবে জিহাদ করেছে কালেমার দাওয়াত নিয়ে সে ভাবে আমাদের জিহাদ করা প্রয়োজন। তিনি বলেছেন বর্তমান বিশ্বে অধিকাংশ আলেম সুন্নত, নফল নিয়ে বিরোধ করছে এবং নতুন নতুন দল তৈরি করছে অথচ এসব ছোটখাটো ব্যাপারে রাসূল সাঃ বিবাদ করতে নিষেধ করেছন এবং এক হতে বলেছেন। এসব আলেমরা শুধু কালেমা পড়তে রাজি বাস্তব জীবনে বাস্তবায়ীত করতে রাজি না । আর এসব অলেমরা জিহাদের ব্যাপারে কোন কথা বলে না অথচ তা (জিহাদ করা) ফরজ। আমি তাকে বলেছি আমাদের তো (রাসূল সাঃ, ওমর রাঃ, আবু বকর রাঃ, উসমান রাঃ, আলী রাঃ) এনাদের মত নেতা নেই যে জিহাদের ডাক দিবে, তো এখন আমারা কার নেতৃত্বে জিহাদ করবো? একা একা তো জিহাদ করা যায় না । যদিও তার অনেক প্রশ্নের জবাব আমি দিতে পারিন, …. তবে আমি বলেছি আমাদের দেশে যারা বড় বড় আলেম আছে তাদের সাথে এ ব্যাপার নিয় কথা বলতে হবে তাহলে সমাধানে আসা যাবে এবং শুধু নিজের বিবেচনায় কোন সিদ্ধানে যাওয়া ঠিক হবে না । দয়াকরে আমার এ প্রশ্নের উত্তরগুলো দিলে মনের দিক থেকে খুব উপকার পেতাম, কারণ খুব দিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছি!!

উত্তর

ওয়া আলাইকুমুস সালাম। আমরা আপনাদের উপকার করতে পারছি জেনে আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করছি। আপনার সবগুলো প্রশ্নের উত্তর একটি বইয়ে পাবেন। বইটির নাম ইসলামের নামে জঙ্গিবাদ। লেখক, শায়খ ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রহ.। আস-সুন্নাহ পাবলিকেশন্স, ঝিনাইদহ থেকে প্রকাশিত। তবে সংক্ষেপে উত্তর হলো: জিহাদ হলো ইসলামী রাষ্ট্রকে শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করার যুদ্ধ। তবে ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে যে কোন চেষ্টা প্রচেষ্টাকে শাব্দিক অর্থে জিহাদ বলা যেতে পারে, পারিভাষিক অর্থে নয়। জিহাদ হতে হবে রাষ্ট্রপ্রধানের নেতৃত্বে। হাদীসে আছে,وَإِنَّمَا الإِمَامُ جُنَّةٌ يُقَاتَلُ مِنْ وَرَائِهِ রাষ্ট্র প্রধান হলেন ঢাল, লড়াই হবে তাকে সামনে রেখে। সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৯৫৭। এর বাইরে কোন ধরনের যুদ্ধকে বা লড়াইকে জিহাদ বলা যাবে না। সুতরাং রাষ্ট্রপ্রধান যখন জিহাদের জন্য বলবেন তখন জিহাদ ফরজ হবে। আর আমাদের কাজ হলো জিহাদের সুযোগ আসলে জিহাদ করা। আর সকলকে ইসলামরে পথে দাওয়াত দেয়া, আহ্ববান করা। দাওয়াতের প্রতিটি সাইডে কাজ করার জন্য চেষ্টা করা। অসহায় মানুষদের সাধ্যানুযায়ী আর্থিক ও মানসিক সাহায্য করা। আবু বকর রা. জিহাদের ঘোষনা দিয়েছিলেন শতাভাগ সত্য। তিনি রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন জিাহাদের ঘোষনা দিতেই পারেন। তবে তার ঘোষনাটি ছিল তার প্রজাদের মাঝে যারা যাকাত দিতে অস্বীকার করেছিল তাদেরকে শাস্থির ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে। তার ঘোষনার সাথে সাধারণ মানুষের ঘোষনাকে মিলিয়ে ফেলা যাবে না। আলেমদের সমালোচনা ভাল মানুষদের কাজ নয়। তাও আবার ঢালাওভাবে সকল আলেমের সমালোচনা। তিনি জিহাদের অর্থ না বুছে শুধু তাদেরকে দোষারোপ করছেন। আলেমদের পক্ষে যা যা করা সম্ভব বা দায়িত্ব তা আমাদের দেশের আলেমগণ সর্বদা করে থাকেন। আল্লাহ আমাদেরকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন।