প্রথমেই আমাদের মনে রাখা দরকার শরীয়তের দলীল সাব্যস্ত হয় কুরআন ও সুন্নাহ তথা হাদীস দ্বারা। শুধু কুরআন দ্বারা নয়। সুতরাং সব হুকুম কুরআনে থাকতে হবে এরকম নয়। বরং কুরআনে বিষয়সমূহের সারকথা আনা হয় আর হাদীসে তার ব্যাখ্যা করা হয়। যেমন সালাত। কুরআনে শুধু সালাত আদায়ের কথা বলা হয়েছে। আর হাদীসে তার বিস্তারিত বিধিবিধান আলোচিত হয়েছে। সুতরাং সবকিছু কুরআনে থাকতে হবে বিষয়টি এমন নয়। সকল ইমাম ও আলেম একমত যে, রাসূলুল্লাহ সা. সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ নবী। কুরআনে স্পষ্টভাবে একথাটি না থাকলেও বহু জায়গায় ইঙ্গিত করা হয়েছে। বিশেষত বহু জায়গায় বলা হয়েছে মুহাম্মাদ বিশ্বের সকল মানুষের জন্য ্প্রেরিত। অন্য কোন নবীকে বিশ্বের সকল মানুষের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে কুরআনে এমন কথা নেই। সহীহ হাদীসে স্পষ্টভাবেই উল্লেখ আছে মুহাম্মাদ সর্বশ্রেষ্ঠ নবী। নীচের হাদীসটি লক্ষ করুন:
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- قَالَ فُضِّلْتُ عَلَى الأَنْبِيَاءِ بِسِتٍّ أُعْطِيتُ جَوَامِعَ الْكَلِمِ وَنُصِرْتُ بِالرُّعْبِ وَأُحِلَّتْ لِىَ الْغَنَائِمُ وَجُعِلَتْ لِىَ الأَرْضُ طَهُورًا وَمَسْجِدًا وَأُرْسِلْتُ إِلَى الْخَلْقِ كَافَّةً وَخُتِمَ بِىَ النَّبِيُّونَ .
অর্থ: হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, আমাকে ছয়টি জিনিস দ্বারা নবীদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দেয়া হয়েছে, আমাকে দেয়া হয়েছে জামিউল কালিম (অল্প কথায় অনেক কিছু ব্যক্ত করার যোগ্যতা), আমাকে ভয় (মুহাম্মাদ সা. কে দেখে কাফেরদের ভয় পাওয়া উদ্দেশ্য) দ্বারা সাহায্য করা হয়েছে, আমার জন্য গণীমত হালাল করা হয়েছে, আমার জন্য সমস্ত ভুমি কে সাজদার জায়গা বানানো হয়েছে, আমাকে সকল সৃষ্টির উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছে এবং আমার দ্বারা নবীদের আগমনের ধারা শেষ হয়েছে। সহীহ মুসলিম,হাদীস নং ৫২৩। দেখুন এই হাদীসে রাসূলুল্লাহ সা. স্পষ্ট করেই বলেছেন তিনিই সর্বশ্রেষ্ঠ নবী। শ্রেষ্ঠত্বের একটি কারন হলো তাকে সকল সৃষ্টির হেদায়াতের জন্য পাঠানে হয়েছে। কুরআনে এই গুনটির কথা বহু জায়াগায় বলা হয়েছে যে, মুহাম্মাদ সা. কে সমস্ত সৃষ্টি জগাতের উদ্দেশ্যে পাঠানে হয়েছে। যেমন সূরা সাবা, আয়াত ২৮, সূরা আরফ, আয়াত ১৫৮, সূরা ফুরকান আয়াত, ১। এছাড়া শ্রেষ্ঠত্বের আরেকটি কারণ হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে তিনি শেষ নবী। কুরআনেও এটা বলা হয়েছে। দেখুন সূরা আহযাব, আয়াত ৪০। আশা করি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। আরো দলীলসহ বিস্তারিত জানতে দেখুন, আল-ইসলাম সুয়াল ও জবাব, প্রশ্ন নং ৮৩৪১৭ (আরবী)।