বিশ্বের যে কোনো মুসলিম দেশের মুসলিম জনগোষ্ঠীর দিকে তাকালে আমরা দেখি যে, তাদের প্রায় ১০% বা ১৫% মানুষ “ধার্মিক মুসলিম”, যারা ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণের চেষ্টা করেন এবং সকলেই এরূপ করুক বলে আশা করেন। এর বিপরীতে জনসংখ্যার অতি নগণ্য অংশ- ২% বা ১%-এরও কম মানুষ ধর্মকে আফিম, প্রতিক্রিয়াশীলতা এবং জাতীয় উন্নয়নের অন্যতম প্রতিবন্ধকতা বলে মনে করেন বা দাবি করেন এবং টুপি, দাড়ি, বোরকা, মসজিদ, মাদ্রাসা ইত্যাদি ধর্মপালন বা ধর্মশিক্ষার যে কোনো প্রকার বা প্রকরণের প্রসারে আতঙ্কিত হন।
বাকী প্রায় ৮০-৮৫% ভাগ মানুষ সাধারণ মুসলিম। যারা ধর্ম সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানেন না, ধর্মের কিছু বিধান পালন করেন, কিছু পরিত্যাগ করেন এবং সাধারণভাবে ধর্ম ও ধার্মিকদের শ্রদ্ধা করেন।
বাস্তবতার নিরিখে দেখা যায় যে, অনেক মুসলিম দেশে বাকস্বাধীনতা বা গণতান্ত্রিক অধিকারের নামে দ্বিতীয় প্রকারের মানুষদেরকে তাদের মতপ্রকাশ ও কর্মকাণ্ডের যেরূপ সুযোগ দেওয়া হয়, প্রথম প্রকারের মানুষদেরকে সেরূপ সুযোগ দেওয়া হয় না, বরং বিভিন্ন অযুহাতে তাদের মতপ্রকাশের অধিকার হরণ করা হয় বা কণ্ঠরোধ করা হয়। “ইসলামপন্থী” বলে আখ্যায়িত ধার্মিক মানষেরা কী দাবি করেন? তাদের দাবি মূলত দু ধরণের:
(১) রাষ্ট্র, প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থায় ইসলামী নীতিমালার বাস্তবায়ন ও
(২) সমাজের অশ্লীলতা, নগ্নতা, মাদকতা ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ। ধার্মিকদের মধ্য থেকে সামান্য মানুষই প্রথম বিষয়ে সরব, তবে সকলেই দ্বিতীয় বিষয়ে আবেগী হন। যে কোনো ধার্মিক মানুষ সমাজের অবক্ষয়, অনাচার, অশ্লীলতা, নগ্নতা, মাদকদ্রব্যের প্রসার, জুলুম-অত্যাচার ইত্যাদি দেখে অত্যন্ত ব্যথিত হন। এগুলি তার হৃদয়ের রক্ত ঝরায়। তিনি এর বিরুদ্ধে কথা বলতে বা প্রতিবাদ করতে চেষ্টা করেন। কিন্তু অনেক সময় তার কথা বলার অধিকার হরণ করা হয়। বিষয়টি খুবই অদ্ভুত!
ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহিমাহুল্লাহ।