পোশাকের ক্ষেত্রে হুবহু অনুকরণ করাকে গুরুত্ব দেওয়া অথচ ইবাদত বন্দেগীর ক্ষেত্রে হুবহু অনুকরণকে গুরুত্বহীন বলে মনে করা।

আমাদের দেশে

অনেক ধার্মিক মানুষ পোশাকের ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হুবহু অনুকরণ করেন অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে। কিন্তু ইবাদত বন্দেগীর ক্ষেত্রে এভাবে হুবহু অনুকরণ করা প্রয়োজনীয় মনে করেন না। তাঁরা তাঁদের টুপি, পাগড়ি, জামা, পাজামা ইত্যাদি অবিকল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মত বানান। কিন্তু সালাত, সিয়াম, যিকির, দরুদ, সালাম, দোয়া, মুনাজাত, তরীকত, দাওয়াত, জিহাদ ইত্যাদি ইবাদতের ক্ষেত্রে তাঁরা আংশিকভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অনুকরণ করেন এবং কিছু নতুন পদ্ধতি সংযোজন করেন। এ সকল বিষয়ে অনেক কাজ তাঁরা করেন যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম করেননি বলে তাঁরা বুঝতে পারেন বা স্বীকার করেন। তাঁরা বলেন: ‘তিনি করেননি, কিন্তু করতে নিষেধ তো করেননি’, ‘অনেক কিছুই তো তিনি করেননি কিন্তু আমরা করি…’, অথবা বলেন, ‘কুরূণে সালাসা বা ইসলামের প্রথম তিন যুগে না থাকলেই তা নিষিদ্ধ বা অপছন্দনীয় হয় না’। কিন্তু পোশাক পরিচ্ছেদের ক্ষেত্রে তাঁরা একথা বলেন না।

উপরের আলোচনা থেকে

এ মানসিকতার বিভ্রান্তি আমরা বুঝতে পারছি। আমরা দেখেছি যে, পোশাক-পরিচ্ছদ, পানাহার ইত্যাদি জাগতিক বিষয় অনেক সময় মুমিন জাগতিক প্রয়োজনে করেন। সাওয়াবের কোনো উদ্দেশ্য অনেক সময় সেখানে থাকে না। আর ইবাদত জাতীয় কর্মের ক্ষেত্রে কর্মকারীর একমাত্র উদ্দেশ্য আল্লাহর নৈকট্য বা সাওয়াব অর্জন করা।

আমরা আরো জানি যে, মুমিনের জীবনের চূড়ান্ত ও পরিপূর্ণ আদর্শ মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তাঁর অনুসরণ-অনুকরণ করাই ইসলাম। তাঁর অনুসরণ-অনুকরণের বাইরে কোনোভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টি, সাওয়াব, জান্নাত বা নাজাত পাওয়ার কোনোরূপ সম্ভাবনা নেই। মুমিন সকল বিষয়েই তাঁর অনুসরণ ও অনুকরণের চেষ্টা করেন। এ অনুকরণের একমাত্র উদ্দেশ্য সাওয়াব বা আল্লাহর সন্তুষ্টি। ইবাদতের একমাত্র উদ্দেশ্য যেহেতু ‘আল্লাহর সন্তুষ্টি ও সাওয়াব’ সেহেতু এক্ষেত্রে অনুকরণের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।

মুআমালাতের ক্ষেত্রেও যতটুকু সাওয়াব তা শুধু তাঁর অনুকরণের মধ্যে। অনুকরণের বাইরে কোনো সাওয়াব নেই। তবে মু‘আমালাত যেহেতু সাওয়াবের উদ্দেশ্য ছাড়াও করা হয়, সেহেতু যা তিনি করেননি এবং করতে নিষেধও করেননি তা মুমিন মুআমালাতের ক্ষেত্রে জাগতিক প্রয়োজনে করতে পারেন, কিন্তু ‘সাওয়াবের’ উদ্দেশ্যে করতে তা পারেন না। তাঁর সুন্নাতের বাইরে কোনো সাওয়াব আছে এ কথা চিন্তা করার অর্থ তাঁর সুন্নাতকে অপূর্ণ মনে করা।

মুমিন তাঁর অনুকরণের বাইরে

যে কাজ করেন তা প্রথমত দু-প্রকার হতে পারে। প্রথম প্রকার কর্ম যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম করেননি এবং করতে নিষেধ বা নিরুৎসাহিত করেছেন। এগুলি মুমিন কোনো অবস্থাতেই করেন না বা করতে চান না। করলেও অনুতাপ অনুভব করেন। দ্বিতীয় প্রকার কর্ম যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম করেননি এবং করতে নিষেধ বা নিরুৎসাহিত করেননি। এ ধরনের কর্ম মুমিন দু-পর্যায়ে করতে পারেন:

১. মুমিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অনুকরণের বাইরে কোনো কর্ম জাগতিক প্রয়োজনে করেন। এ কর্ম দ্বারা তিনি কোনো সাওয়াব বা আল্লাহর নৈকট্য আশা করেন না। যেমন পানাহার, বসবাস, পোশাক পরিচ্ছদ ইত্যাদি। একজন বাঙালী ভাত, মাছ ইত্যাদি আহার করেন। তিনি কখনোই মনে করেন না যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অবিকল অনুসরণ করে খেজুর, যবের রুটি ইত্যাদি খাওয়ার চেয়ে ভাত, মাছ ইত্যাদি খাওয়া আল্লাহর নিকট বেশি সাওয়াবের বা উত্তম।

বরং তিনি সম্ভব হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হুবহু অনুকরণ করে খেজুর, যবের রুটি ইত্যাদি খেতে ভালবাসেন। কিন্তু অভ্যাস ও পরিবেশগত কারণে বা বাধ্য হয়ে একান্ত জাগতিক কর্ম হিসাবে তিনি সাধারণত ভাত, মাছ ইত্যাদি আহার করেন। এ প্রকারের ‘খিলাফে সুন্নাত’ বা ‘অনুকরণের বিচ্যুতি’ সাধারণভাবে অপরাধ বলে গণ্য হবে না।

২. মুমিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অনুকরণের বাইরে কোনো কর্ম আল্লাহর নৈকট্য, সন্তুষ্টি বা সাওয়াব অর্জনের জন্য করেন। তিনি মনে করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাজটি এভাবে না করলেও, তিনি তা করতে নিষেধ করেননি, বরং অন্যান্য ‘দলিল’ দ্বারা কাজটির গুরুত্ব প্রমাণিত হয়। কাজেই অবিকল তাঁর অনুকরণে পালিত কর্মের চেয়ে এ কর্মে সাওয়াব বেশি, অথবা অনুকরণের বাইরে এ কর্মটি না করলে দীনদারী একটু কম থেকে যায়।

যেমন, সালাতের মধ্যে প্রতি রাক‘আতে

২ টি রুকু বা ৩/৪ টি সাজদা করা, চক্ষু বন্ধ করে সালাত আদায় করা, কাফনের কাপড় পরে সালাত আদায় করা। সর্বদা হজ্জের ইহরামের অনুরূপ কাপড় পরে সালাত আদায় করা। পাঁচ ওয়াক্ত ফরয সালাতের পরে নিয়মিতভাবে শুকরানা সাজদা করা। পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের পরের যিক্র, দু‘আ বা তাসবীহ-তাহলীল সমবেতভাবে পালন করা। সালাতের তাকবীরে তাহরীমার আগে ও সালামের পরেই দরুদ পাঠের রীতি তৈরি করা। আউযূ বিল্লাহ, বিসমিল্লাহ বা দরুদ শরীফ পাঠ করে আযান শুরু করা। নিয়মিত জামাতে তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করা। বেশি সাওয়াবের উদ্দেশ্যে সিয়ামের ইফতার দেরি করে করা। দলবেধে দাঁড়িয়ে, নাচানাচি করে বা সুরকরে যিকির করা বা দরুদ-সালাম পাঠ করা। এভাবে ঈমান, সালাত, সিয়াম, যাকাত, হজ্জ, যিকির, তিলাওয়াত, দরুদ, সালাম, দাওয়াত বা অন্য কোনো ইবাদতে সাওয়াব বৃদ্ধি বা ইবাদত হিসাবে এমন কোনো কর্ম করা। যা তিনি বা তাঁর সাহাবীগণ করেননি এবং করতে নিষেধও করেননি।

উপরন্তু বিভিন্ন

‘দলিলের’ আলোকে তা করা ‘ভাল’ বলে প্রমাণ করা যায়। যেমন, ‘সকল কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলার গুরুত্ব’ কুরআন-হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। আমরা জানি যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবীগণ ‘আল্লাহু আকবার’ বলে আযান শুরু করতেন, কখনোই তাঁরা ‘বিসমিল্লাহ…’ বলে আযান শুরু করেননি। তবে তাঁরা নিষেধ করেননি এবং অন্য দলিলে তার গুরুত্ব প্রমাণিত হয়। কাজেই আমরা আমাদের আযান ‘বিসমিল্লাহ’ দিয়ে শুরু করব। ‘বিসমিল্লাহ’ বিহীন আযানের চেয়ে ‘বিসমিল্লাহ’-সহ আযানই উত্তম, অথবা ‘বিসমিল্লাহ’ বললে আরেকুট ভাল হয়। সশব্দে কুরআন পাঠ করলে যেমন সশব্দে বিসমিল্লাহ বলা ভাল, তেমনি আযানের শুরুতেও উচ্চস্বরে ‘বিসমিল্লাহ…’ বলাই ভাল। এ ছাড়া জোরে বললে বেশি মানুষ শুনবে এবং বেশি সাওয়াব হবে।… এভাবে উপর্যুক্ত সকল কর্মের পক্ষেই অগণিত ‘অকাট্য’ দলিল পেশ করা যায়।

এ ধরনের দলিলের ভিত্তিতে কেউ যদি মনে করেন যে, যে কর্ম রাসূলুল্লাহ ব বা সাহাবীগণ করেননি সেই কর্ম করলে আল্লাহ বেশি সন্তুষ্ট হন, বেশি সাওয়াব হয়, বেশি আদব হয়, বেশি বেলায়াত হয়, অথবা এ কর্ম না করলে দীনদারী, আদব বা বেলায়াত একটু কম থেকে যায় তাহলে নিঃসন্দেহে তার ঈমান ভীতিজনক অবস্থায় রয়েছে। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নাতকে অবজ্ঞা করছেন, অপছন্দ করছেন এবং তাঁর সুন্নাতকে আল্লাহর সন্তুষ্টি, নৈকট্য ও সাওয়াব অর্জনের জন্য যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন।

আমরা মুমিনের ‘খেলাফে সুন্নাত’ কর্ম ৪ পর্যায়ে ভাগ করতে পারি:

১. একব্যক্তি

এমন ধরনের পোশাক পরছেন, খাদ্য খাচ্ছেন, বাড়িঘরে বাস করছেন, চাষাবাদ করছেন বা কোনো জাগতিক কাজ করছেন যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম করেননি এবং করতে নিষেধ করেননি। তিনি এ কর্মের মধ্যে কোনো বিশেষ সাওয়াব কল্পনা করছেন না। একান্ত জাগতিক প্রয়োজনেই তা করছেন। এ পর্যায় সম্ভব ও তা অপরাধ নয়।

২. একব্যক্তি এমন ধরনের পোশাক পরছেন,

খাদ্য খাচ্ছেন, বাড়িঘরে বাস করছেন, চাষাবাদ করছেন বা কোনো জাগতিক কাজ করছেন যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম করেননি এবং করতে নিষেধ করেননি। তিনি এ কর্মের মধ্যে বিশেষ সাওয়াব কল্পনা করছেন। তিনি মনে করছেন হুবহু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অনুকরণ করার চেয়ে এইরূপ অনুকরণহীনভাবে বা আংশিক অনুকরণ করে কাজটি সম্পাদন করাই উত্তম বা বেশি সাওয়াবের। যেমন, তিনি ভাত খান অথবা তিনি খেজুর বা যবের রুটিই খান, তবে অবিকল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পদ্ধতিতে না খেয়ে ‘আধুনিক’ ও ‘উন্নত’ পদ্ধতিতে খান এবং মনে করেন যে, অবিকল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অনুকরণে খেজুর বা যবের রুটি খাওয়ার চেয়ে ভাত খাওয়ায় অথবা অবিকল তাঁর পদ্ধতিতে খাওয়ার চেয়ে ‘উন্নত’ বা ‘আধুনিক’ পদ্ধতিতে খাওয়ায় সাওয়াব বেশি। অথবা এভাবে না খেলে দীনদারী বা আদব কম হয়। এ পর্যায় সাধারণত পাওয়া যায় না। যদি পাওয়া যায় তাহলে তা নিঃসন্দেহে ঘৃণার্হ এবং এ ব্যক্তি সুন্নাত অপছন্দ করার পাপে লিপ্ত।

৩. একব্যক্তি ঈমান, আকীদা,

সালাত, সিয়াম, যাকাত, হজ্জ, যিকির, তিলাওয়াত, দোয়া, মুনাজাত ইত্যাদি ইবাদত বিষয়ক কর্মের মধ্যে এমন কাজ করছেন যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম করেননি এবং করতে নিষেধ করেননি। তিনি এ কর্মের মধ্যে কোনো বিশেষ সাওয়াব কল্পনা করছেন না। একান্ত জাগতিক প্রয়োজনেই তা করছেন। যেমন, বিশেষ কারণে বাধ্য হয়ে বিসমিল্লাহ বলে আযান শুরু করছেন, তবে তিনি জানেন যে, আযানের আগে বিসমিল্লাহ বলা সুন্নাতের খিলাফ এবং বিসমিল্লাহ-সহ আযানের চেয়ে বিসমিল্লাহ-বিহীন আযানই উত্তম ও বেশি সাওয়াবের। অথবা তিনি বিশেষ কারণে বা প্রয়োজনে দাঁড়িয়ে বা নেচেনেচে যিক্র করছেন বা দরুদ-সালাম পাঠ করছেন। তিনি জানেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবীগণ কখনো এভাবে যিক্র বা দরুদ-সালাম পাঠ করতেন না। তিনি তাঁদের পদ্ধতিই উত্তম বলে জানেন এবং একান্তই প্রয়োজনে সুন্নাতের খিলফ করেছেন। এ পর্যায় সাধারণত পাওয়া যায় না। পাওয়া গেলে তা ১ম পর্যায়ের মত ক্ষমার্হ।

৪. একব্যক্তি ঈমান,

আকীদা, সালাত, সিয়াম, যাকাত, হজ্জ, যিকির, তিলাওয়াত, দোয়া, মুনাজাত ইত্যাদি ইবাদত বিষয়ক কর্মের মধ্যে এমন কাজ করছেন যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম করেননি এবং করতে নিষেধ করেননি। তিনি এ কর্মের মধ্যে বিশেষ সাওয়াব কল্পনা করছেন। তিনি মনে করছেন হুবহু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অনুকরণ করার চেয়ে এইরূপ অনুকরণহীনভাবে বা আংশিক অনুকরণসহ কাজটি সম্পাদন করাই উত্তম বা বেশি সাওয়াবের। এ পর্যায় পাওয়া যায়। জেনে অথবা না জেনে অনেক ধার্মিক মুসলিম এ পর্যায়ের অগণিত কর্মে লিপ্ত হন। এ পর্যায় নিঃসন্দেহে ঘৃণার্হ এবং এ ব্যক্তি সুন্নাত অপছন্দ করার পাপে লিপ্ত।

আমরা বুঝতে পারছি যে,

পোশাক, পানাহার, বাড়িঘর ইত্যাদি বিষয়ে অনুকরণহীনতা, আংশিক অনুকরণ বা ‘খিলাফে সুন্নাত’ কর্ম মূলত ১ম পর্যায়ের এবং তা অপরাধ নয়। আর ইবাদত-বন্দেগী ও নেক-আমলের ক্ষেত্রে অনুকরণহীনতা, আংশিক অনুকরণ বা ‘খিলাফে সুন্নাত’ কর্ম মুলত ৪র্থ পর্যায়ের এবং অত্যন্ত অন্যায়। কাজেই, পোশাকের ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হুবহু অনুকরণের প্রাণপন চেষ্টা করা আর ইবাদত-বন্দেগী ও নেক আমলের ক্ষেত্রে তাঁর হুবহু অনুকরণ বাদ দিয়ে ‘অগণিত অকাট্য দলীল’ দিয়ে নতুন নতুন পদ্ধতি বানানো নিঃসন্দেহে অসুস্থ ঈমান, রুগ্ন মানসিকতা ও বিভ্রান্তির পরিচায়ক।

আমাদের সমাজের দীনদার বা ধার্মিক মানুষদের ‘ধর্মকর্ম’ বা ইবাদত বন্দেগীর মধ্যে অগণিত ‘খেলাফে-সুন্নাত’ কর্ম ও ইবাদতের ক্ষেত্রে ‘আংশিক অনুকরণের প্রবণতা’ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য পাঠককে আমার লেখা “এহইয়াউস সুনান” নামক গ্রন্থটি পড়তে অনুরোধ করছি। মহান আল্লাহ আমাদেরকে সুন্নাতে নববীর হুবহু ও পরিপূর্ণ অনুসরণের তাওফীক দিন।

ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহিমাহুল্লাহ

বই: পোশাক পর্দা ও দেহ-সজ্জা

আহকামে সিয়াম, আল্লাহর পথের পাথেয় (২), সকল বিদ‘আত কর্মই মূলত জায়েজ,